কট্রাক্ট ম্যারেজের নামে বহু নারীর জীবন নষ্ট করেছে হেফাজত নেতারা

Avatar photo
News Desk
  • Update Time : Saturday, May 8, 2021

ক্রমশ খেলাফত-পন্থী জঙ্গি সংগঠন হেফাজতে ইসলামের নেতাদের জঘন্য চেহারা জনসম্মুখে ফাঁস হতে শুরু করেছে। মামুনুল হকের বিরুদ্ধে জান্নাত আরা ঝর্ণা কর্তৃক ধর্ষণ মামলা দায়েরের পর এবার হেফাজতের আরেক পান্ডব জাকারিয়া নোমান ফয়েজি’র বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন এক নারী। চট্টগ্রাম জেলার হাটজাহারী থানায় দায়ের করা এই মামলায় ধর্ষিতা নারী অভিযোগ করেন ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তাঁর সাথে ম্যাসেঞ্জারে হেফাজত নেতা জাকারিয়া নোমান ফয়েজির পরিচয় হয়। ফয়েজি ওই নারীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে হাটহাজারীতেই একটা বাসা ভাড়া করে সেখানে তোলেন। তারপর ওই নারীকে বিয়ে না করে কথিত কন্ট্রাক্ট ম্যারেজের অজুহাতে মাসের-পর-মাস আটকে রেখে ধর্ষণ করতে থাকেন। এরপর ওই নারী হাটহাজারীর বাসা ছেড়ে তাঁর এক আত্মীয়ের বাসায় চলে গেলে সেখান থেকেও নানা অজুহাতে জাকারিয়া তাঁকে বিভিন্ন হোটেলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করতেন বলে অভিযোগে উল্লেখ আছে।

এদিকে হেফজতে ইসলামের কীর্তিমান নেতা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে আরো একাধিক নারীসহ বেশ কিছু মাদ্রাসা ছাত্র ধর্ষণ এবং বলাৎকারের অভিযোগে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

হেফাজতের সাম্প্রতিক জঙ্গি তৎপরতা সম্পর্কে খ্যাতিমান কলামিষ্ট আব্দুল গাফফার চৌধুরী সম্প্রতি একটি বাংলা কাগজে লিখেনঃ কিছুকাল ধরেই হেফাজত নেতাদের কার্যকলাপ কথাবার্তা শুনে মনে হচ্ছিল হেফাজত দেশে একটা পাল্টা সরকার প্রতিষ্ঠা করে ফেলেছে। হাসিনা সরকার তাদের কাছে নতজানু। তারা ইসলামের যে মনগড়া ব্যাখ্যা দেবে, সেই ব্যাখ্যাই দেশের মানুষকে মেনে চলতে হবে। মামুনুল হকের ধৃষ্টতা এতটা বেড়ে গিয়েছিল যে জাতির পিতার ভাস্কর্য ভাঙার নির্দেশ তিনি দিয়েছিলেন। ওয়াজ মাহফিলে নিজের হাবভাব, মুখভঙ্গিকে তিনি রাসুল (সা.)-এর হাবভাব মুখভঙ্গি বলে দাবি জানাতেন।

তাঁর ব্যক্তিগত জীবনও বিতর্কিত। তিনি যে মহিলাকে নিয়ে রিসোর্টে বেড়াতে গিয়ে জনতার হাতে ধরা পড়েন, তাকে দ্বিতীয় স্ত্রী বলে দাবি করলেও তাঁর দাবির প্রমাণ দেখাতে পারেননি। তাঁর এই গোপন বিয়ে অথবা গোপন সম্পর্কের কারণ দর্শাতে গিয়ে বানোয়াট হাদিস বলে পবিত্র হাদিসের অবমাননা করেছেন। বলেছেন, স্ত্রীকে খুশি রাখার জন্য মিথ্যা কথা বলা হলে পাপ হয় না।

আব্দুল গাফফার চৌধুরী আরো লিখেনঃ বাবুনগরী, মামুনুল হক এবং এজাতীয় কিছু হেফাজত নেতাকে ধরা হলেই হেফাজতি উৎপাত থেকে দেশ মুক্ত হবে তা নয়। জামায়াতের মতো হেফাজতেরও আসল শক্তি মাদরাসা, বিশেষ করে কওমি মাদরাসা। সরকার দেশে যত মাদরাসার সংখ্যা বাড়তে দেবে, ততই জামায়াত ও হেফাজতের সদস্য ও সমর্থকের সংখ্যা বাড়তে থাকবে। এখন পর্যন্ত বেশির ভাগ মাদরাসায় জাতীয় সংগীত গাওয়া হারাম। জাতীয় পতাকা উত্তোলন নিষিদ্ধ। বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা বলে স্বীকার করা হয় না। স্বীকার করতে দেওয়া হয় না। ছাত্র-ছাত্রীরা সবাই গরিব ঘর থেকে আসে। ইসলামী শিক্ষাদানের নামে হেফাজতি, জামায়াতি অসাধু রাজনৈতিক শিক্ষা দ্বারা ছাত্র-ছাত্রীদের মস্তিষ্ক ধোলাই করা হয়। এক শ্রেণির মসজিদের খতিবরাও জুমার নামাজের সময় যে খুতবা পাঠ করেন, তা কট্টর ওয়াহাবিজম প্রচার। পবিত্র ইসলাম প্রচার নয়।

হেফাজতের সাইবার জিহাদ ইউনিটের অপতৎপরতা

হেফাজতে ইসলামের জঙ্গি তৎপরতার বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি যখন দৃশ্যমান ঠিক তখনই এই উগ্র সংগঠনের হাজার-হাজার সমর্থক ও কর্মী পুরো শক্তি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ইউটিউবে সাইবার অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছে। এবিষয়ে ব্লিটজ-এ একাধিক রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। সরকারের উচিৎ এক্ষুনি এই সাইবার জিহাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়ে এদের সমূলে ধ্বংস করা। তা না হলে এরা ক্রমশ ভয়ংকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

Please follow Blitz on Google News Channel

Avatar photo Contents published under this byline are those created by the news team of BLiTZ

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2005-2024 BLiTZ
Design and Development winsarsoft